দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহঃ কৃষিতে ক্ষতির সম্ভাবনা এবং প্রয়োজন শিশু ও প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য বাড়তি সতর্কতা

দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহঃ কৃষিতে ক্ষতির সম্ভাবনা এবং প্রয়োজন শিশু ও প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য বাড়তি সতর্কতা
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল যেমন রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর ওপর বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, এই শৈত্যপ্রবাহ ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে। তবে এই বছরের (২০২১) শেষ পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে শীতের প্রকোপ কমার সম্ভাবনা কম।
গত ২০ ডিসেম্বর ২০২১, প্রায় ৮ জেলার (সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৭ ডিগ্রি, তেতুলিয়ায় ৯.৪ ডিগ্রি) রাজশাহী, ঈশ্বরদী (পাবনা), বদলগাছি (নওগাঁ), রাজারহাট (কুড়িগ্রাম), যশোর এবং বরিশালের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে ছিল (তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর)

শৈত্যপ্রবাহের ফলে কৃষির ওপর প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব কৃষিতে পড়বে। দুই সপ্তাহের বেশী শৈত্যপ্রবাহ হলে কৃষকের মাঠে থাকা আলুর ফসলে লেট ব্লাইট (পচন রোগ) ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া বোরো ক্ষেতের বীজতলায় কোল্ড ইনজুরি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রীর নিচে থাকলে ফসলে পচনের সম্ভাবনা বেশি। তাই সমস্যা দেখা দিলে আলু ক্ষেতে ছত্রাক নাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছে অধিদফতর। শীতে কৃষি সুরক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে দুর্যোগ ফোরাম কর্তৃক প্রকাশিত ‘শৈত্য প্রবাহঃ জীবন ও জীবিকা সংরক্ষণে করণীয়’ পুস্তিকাটি দেখুন (মূল্যঃ ৩০০ টাকা)।

শীতে শিশু এবং প্রবীণ ব্যক্তিদের প্রতি বাড়তি সতর্কতা
বিভিন্ন পত্রপত্রিকা এবং জেলা হাসপাতালগুলো থেকে জানা গেছে শীতের প্রকোপে শিশু এবং প্রবীণ ব্যক্তিরা বিভিন্ন শীতজনিত অসুখ, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ঠান্ডা জ্বর আর ঠান্ডা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন জেলার সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ঠান্ডাজনিত অসুখে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এই তীব্র শীতের সময়ে শিশু এবং প্রবীণ ব্যক্তিদের সুরক্ষার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

শীতে পেটের অসুখ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য করণীয়

শীতের সময়ে শরীরের বাহ্যিক তাপমাত্রা এবং আভ্যন্তরীণ তাপমাত্রার ব্যাপক পার্থক্যের কারণে বিপাক ক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম দেখা যায়। ফলে ডায়রিয়া, আমাশয় এবং অন্যান্য পেটের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ২/৩ দিনের বাসি খাবার বা ঠান্ডা খাবার খাওয়ার ফলেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া শীতকালে অপরিচ্ছন্নতার কারণে (মানুষ পানির ব্যবহার কম করে) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।

আগুন পোহানোর সময়ে বাড়তি সতর্কতা
যেসব এলাকায় শীতের প্রকোপ বেশি অনুভূত হচ্ছে, সেখানে ইতোমধ্যে অনেকেই খড়কুটোতে আগুন দিয়ে তাপ পোহাচ্ছেন। আগুন পোহানোর উদ্দেশ্যে বদ্ধ ঘরে কাঠ বা খড় কুটো জ্বালানোর ফলে উৎপন্ন ধোঁয়া থেকে হাঁপানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া অসাবধানতাবশত, আগুন লাগার সম্ভাবনাও থাকে। এজন্য এদিকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *