নিম্নচাপ ও ভাদ্রের জোয়ারের কারণে প্লাবণের সম্ভাবনা ও এই সময়ে শিশু সুরক্ষা

সতর্কবার্তা বার্তা ০৬, আগস্ট ২০২১

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৬ সেপ্টেম্বরের বুলেটিন অনুযায়ী পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে এবং দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে নিম্নচাপটি আরো শক্তিশালী হয়ে উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে ৬ থেকে ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। অমাবস্যা এবং নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টির কারণে উপকূলীয় অঞ্চলগুলি প্লাবণের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
সাধারণত বছরের এই সময় ভাদ্রের মরা কাটাল, ভরা কাটালে জোয়ারের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি থাকে। সেপ্টেম্বর মাসে (ভাদ্র-আশ্বিন) পুর্ণিমায় সাগরে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং উপকূলীয় অঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। আগের বছরগুলির তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সেপ্টেম্বর মাসে জোয়ারে উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত হওয়া নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে, ২০০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০০৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর এবং গত বছর ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর উপকূলীয় এলাকাসমূহ জোয়ারে প্লাবিত হয়েছিল।
বর্তমান পরিস্থিতি
আগামী ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভাদ্রের জোয়ারের (মরা কাটাল) জন্য উপকূলীয় অঞ্চল জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে। ‘টাইডাল ফোরকাস্ট ডটকম’-এর তথ্য অনুযায়ী অমাবস্যার প্রভাবে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাবে যা ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে আজ (৬ সেপ্টেম্বর ২০২১) বেলা ১২টার সময়ে জোয়ারের উচ্চতা প্রায় ১৪ ফুট বৃদ্ধি পাবে (স্বাভাবিক জোয়ারের সময় ৯ ফুটের বেশি থাকে) এবং আগামীকাল অর্থাৎ, ৭ সেপ্টেম্বর ১৫ ফুটের ওপর বৃদ্ধি পাবে। আর খুলনার পশুর নদী অঞ্চলে এটি দাঁড়াবে ১১ ফুটে (স্বাভাবিক জোয়ারের সময় ৮ ফুটের মত থাকে)।

আগামী পূর্ণিমার সময় জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধি
ভরা কাটালের প্রভাবে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ উপকূলীয় অঞ্চল পরবর্তী জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে। ‘টাইডাল ফোরকাস্ট ডটকম’-এর তথ্য অনুযায়ী, পূর্ণিমার জন্য ২০ সেপ্টেম্বর জোয়ারের পানি ১৪ ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ২৩ সেপ্টেম্বরের পর থেকে পানির উচ্চতা কমতে থাকবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ বেলা ১টার সময়ে জোয়ারের উচ্চতা থাকবে প্রায় ১৪ ফুটের মত (স্বাভাবিক জোয়ারের সময় ৯ ফুটের বেশি থাকে), আর খুলনার পশুর নদী অঞ্চলে এটি ১১ ফুট (স্বাভাবিক জোয়ারের সময় ৮ ফুটের মত থাকে) পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।

জোয়ারের পানি বৃদ্ধির সময় শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে
বন্যার পানিতে কম বয়সী শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনা ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যা অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির কারণে আরো বেড়ে যেতে পারে। এই সময়ে শিশুদের নিরাপত্তা বিশেষ করে যাদের আগে থেকে খিঁচুনী বা মৃগী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝোঁক আছে তাদের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। (মস্তিষ্ক-কোষ বা নিউরনের তড়িৎ বেগের (Electric discharge) অস্বাভাবিকতার কারণে যে কোনো ধরনের ক্ষণস্থায়ী শারীরিক প্রতিক্রিয়া বা বাহ্যিক লক্ষণকে খিঁচুনি বলে।) ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বা তার বেশী খিঁচুনি হয় তাহলে এটিকে মৃগীরোগ (Epilepsy) হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সাধারণত পানি বা আগুনের কাছে আসলে খিঁচুনি রোগীর বিপদ আরো বেড়ে যায়। হঠাৎ করে আসা জোয়ারের পানি অনেক সময় এই বিপদ আরো বাড়িয়ে দেয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *