পানিতে ডোবা থেকে শিশুকে রক্ষা


বাংলাদেশে পাঁচ বছরের শিশুমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান বড় কারণ পানিতে ডোবা। কেবল গ্রামের শিশুরাই নয়, শহরের শিশুরাও বেড়াতে গিয়ে, বিশেষ করে ঈদের ছুটির সময় এমন করুণ মৃত্যুর শিকার হয় বেশি। শিশুরা পানিতে পড়লে মুহূর্তের মধ্যেই তার মৃত্যু হতে পারে। খুব অল্প পানিতেও শিশু মারা যেতে পারে। তাই খেয়াল রাখতে হবে যাতে শিশু দুর্ঘটনার মখোমুখি না হয়। বেশিরভাগ শিশুই পানিতে ডুবে মারা যান সকাল এগারোটা থেকে বেলা তিনটার মধ্যে এবং মায়ের ১০০ গজ দূরত্বের মধ্যে। এই সময় মা সংসারের দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত থাকেন। এছাড়া বেশিরভাগ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় একজন শিশু ডুবে গেলে তাকে বাঁচাতে অন্য শিশুটিও মিারা যায়। কাজেই শিশুকে পানিতে ডোবা থেকে রক্ষার জন্যঃ
১) মা কাজে ব্যস্ত থাকার সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের শিশুদের দেখভালের দায়িত্ব নিতে হবে।
২) কাছের পুকুর/ডোবা/জলাশয়ের চারপাশে বেড়া দিয়ে দিতে হবে।
৩) পানি ধরে রাখার পাত্র গুলিতে ঢাকনার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪) শিশুদের কোন অবস্থাতেই জলাশয়ের কাছে বয়স্ক মানুষের তত্বাবধান ছাড়া একা বা দল বেঁধে ঘুরতে যেতে দেয়া ঠিক নয়।
৫) যেসব শিশুর খিঁচুনি বা মৃগীরোগের লক্ষন আছে তাদের কোন অবস্থাতেই জলাশয়ের কাছে যেতে দেয়া যাবে না।

এরপরেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারনা না থাকার কারণে উদ্ধার করা শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয়না। শিশুকে পানি থেকে তুলে এনে দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে মৃত্যুর হার অনেকটাই কমানো সম্ভব।
১ ) শিশু পানিতে পড়ে গেলে দিশেহারা না হয়ে আশপাশের মানুষকে সাহায্যের জন্য ডাকুন ও যত দ্রুত সম্ভব তাকে পানি থেকে তুলে আনুন। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান।
২) শিশুটির গায়ের ভেজা জামা-কাপড় পাল্টে শুকনো কাপড় বা চাদর জড়িয়ে দিন।


৩) মুখে ও নাকে কোনো ময়লা থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করুন।
৪) শিশুটির নাকের কাছে হাত দিয়ে, কান নিয়ে অনুভব করুন তার শ্বাসপ্রশ্বাস চলছে কি না।
৫) পেটে চাপ দিয়ে পানি বের করা যায়। তবে এভাবে পানি বের করতে গিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাসে দেরি হতে পারে, আবার পানি ফুসফুসে চলে যেতে পারে। তার চেয়ে মুখের মাধ্যমে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়া বেশি কার্যকারী। মুখ থেকে মুখে বা মুখ থেকে নাকে কৃত্রিম শ্বাস দিন। দ্রুত হাসপাতাল বা কাছের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন এবং নেওয়ার পথেও কৃত্রিম শ্বাস চালিয়ে যান।