তাপপ্রবাহ

সতর্কবার্তা-৩ ১০ এপ্রিল ২০২৩

দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে: এই সময়ে কৃষি ক্ষেত্রে করণীয়

বর্তমান পরিস্থিতি: দেশের কয়েকটি জেলা যেমন রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগসহ মৌলভীবাজার জেলার উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। গত ২৪ ঘণ্টায় (১০ এপ্রিল সকাল ৬ টা পর্যন্ত) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্রমতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় (১০-১১ এপ্রিল) দেশের কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তাপমাত্রা আরও কিছুটা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া আগামী সাত দিন (১০-১৬ এপ্রিল) পর্যন্ত বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই এবং তাপপ্রবাহ আগামী সাত দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়াবিদরা।

কৃষি আবহাওয়া বার্তা


বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (BWOT Weather Team) কর্তৃক আগামী ৭ দিনের (১০-১৬ এপ্রিল) কৃষি আবহাওয়া বার্তা
বাংলাদেশে বর্তমানে বোরো ধান চাষ ও রবিশস্যের চাষের মৌসুম চলছে । বর্তমানে দেশে তাপপ্রবাহ দাবানল ১ চলার জন্য অনেক এলাকায় পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছে । যার ফলে অনেক ফসলের নানাবিধ রোগব্যাধি দেখা দিচ্ছে ।
কৃষি সতর্কবার্তা : আগামী ১০ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে কোন বৃষ্টি সম্ভাবনা নেই বা পাওয়া যায় নি। তাই কৃষক ভাইদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আপনারা কৃত্রিম সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।


বোরো ধানে চাষী ভাইদের নিম্মলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে
১) হিটশক বা হিট ইনজুরি: বৃষ্টিহীন গরম ঝড়ো বাতাসে দেশের অনেক জায়গায় ফুল আসা ধান হিট শক/হিট ইনজুরিতে পড়ে চিটা বা শীষ সাদা হয়ে যেতে পারে। এ সময় বোরো ধানের যে সকল জাত ফুল ফোটা পর্যায়ে আছে বা এখন ফুল ফুটছে বা সামনে ফুল ফুটবে সে সকল জমিতে পানি ধরে রেখে ধানের ফুল ফোটা পর্যায়ে হিট শক/হিট ইনজুরি থেকে রক্ষার পরামর্শ দেওয়া হলো।
২) গরম বা উচ্চ তাপমাত্রা: দিনের তাপমাত্রা হলো ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি। ফুল ফোটার সময় (সকাল ৭.০০ টা থেকে ১১.৩০ টা পর্যন্ত) যদি ১-২ ঘণ্টা ঐ তাপমাত্রা বিরাজ করে তাহলে ধান চিটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৩) গরম বাতাস বা লু হাওয়া: প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাস বা গরম বাতাসের কারণে গাছ থেকে পানি প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে যায়। এতে ফুলের অঙ্গগুলোর গঠন বাধাগ্রস্ত হয়। আবার ঝড়ো বাতাস পরাগায়ন, গর্ভধারণ ও ধানের মধ্যে চালের বৃদ্ধি ব্যাহত করে। এতে ধানের সবুজ খোসা খয়েরি বা কালো রঙ ধারণ করে। ফলে ধান চিটা হয়ে যেতে পারে।
৪) খরা: খরার কারণে শীষের শাখা বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং বিকৃত ও বন্ধ্যা ধানের জন্ম দেয়ায় চিটা হয়ে যায়।


করণীয়ঃ
প্রচণ্ড গরম ও ঝড়ো বাতাসের কারণে কোথাও ধান চিটা হতে দেখা গেলে-
১। হিটশক থেকে বোরো ধান রক্ষা করতে জমিতে ৫-৭ সে.মি. বা ২-৩ ইঞ্চি পানি কাইচ থোড় থেকে ফুল ফোঁটা পর্যন্ত ধরে রাখুন।
২। এমওপি সার ১০ লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম মিশিয়ে ৫ শতাংশ হিসেবে স্প্রে করুন
অথবা
৩। বিঘা প্রতি ৫ কেজি হিসেবে দানাদার এমওপি সার উপরি প্রয়োগ করুন।


তীব্র এই গরমে সাধারণ জনগণের করণীয়: এই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। অতিরিক্ত ঘামের কারণে অনেকের বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের মাঝে বাড়ছে সর্দিকাশি। একইসাথে ছোট শিশুদের ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
এই সময় রোদ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি প্রচুর পানি জাতীয় খাবার খেতে হবে। যারা রোজা রাখছেন তাদের ইফতারির পর থেকে সেহরি পর্যন্ত পানি জাতীয় খাবার খেতে হবে, যাতে শরীরে কোনও পানির ঘাটতি না হয়। শিশু ও বৃদ্ধদের খেয়াল রাখতে হবে যাতে তারা কম ঘামে । পাশাপাশি বাইরে বের হলে সূর্যের ক্ষতিকর তাপ থেকে শরীরকে রক্ষা করার জন্য সানগ্লাস, মাস্ক, ক্যাপ, স্ক্যার্ফ ব্যবহার করা উচিত।

তথ্যসূত্রঃ

তাপ প্রবাহ

https://live.bmd.gov.bd/

Leave a Reply