কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা: এই সময় ফসল রক্ষায় করণীয়

১৯ মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা: এই সময় ফসল রক্ষায় করণীয়

সতর্কতামূলক পদক্ষেপ

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল মার্চ মাসে কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগাম পূর্বাভাস অনুযায়ী গত ১৪ মার্চ সুনামগঞ্জ জেলার সদর, তাহিরপুর, ধর্মপাশা ও জামালগঞ্জ উপজেলায় মৌসুমের প্রথম শিলাবৃষ্টি হয়েছে এবং ১৫ মার্চ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টার (১৬-১৭মার্চ) পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকাসহ কুমিল্লা, যশোর, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ১৭-১৯ মার্চ থেকে দেশের প্রায় সব অঞ্চলের উপর দিয়ে শক্তিশালী কালবৈশাখীর আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। এই সময়ে ফসলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই সময় ফসল রক্ষায় কৃষকভাইদের করণীয় কাজগুলো হলোঃ
• ঝড়-বৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টির হওয়ার পরপরই ফসলের ক্ষেতে ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ সাময়িক বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও খুব প্রয়োজন না হলে জমিতে সেচ প্রদান বন্ধ রাখুন।
• এ সময়ে মাঠে থাকা গম ফসল পেঁকে গেলে কেটে ফেলতে হবে এবং নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে। সাথে সাথে মাঠে থাকা ডাল ফসল সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে।
• মাঠে থাকা পেঁপে, কলা, সজিনা গাছে এবং ছোট আম গাছে খুঁটি দিতে হবে।
• ঝড়ের কারণে ধানের পাতা ছিড়ে যেতে পারে, ফলে পাতা পোড়া (বিএলবি) রোগে আক্রান্ত হতে পারে। পাতা পোড়া (বিএলবি) রোগে আক্রান্ত হলে ক্ষেতের পানি বের করে দিতে হবে।
• প্রাথমিকভাবে বিএলবি বা বিএলএস রোগের আক্রমণ দেখা দিলে ৬০ গ্রাম এমওপি, ৬০ গ্রাম থিওভিট ও ২০ গ্রাম দস্তা সার (মনোহাইড্রট) ১০ লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশেয়ে ৫ শতাংশ জমিতে বিকালে স্প্রে করতে হবে। তবে ধানের ফুল ফোটা পর্যায়ের আগে থাকলে বিঘা প্রতি অতিরিক্ত ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে।
• মাঠে থাকা পেঁয়াজ ও রসুন সংগ্রহের উপযোগী হলে সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে।

তথ্যসূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস, রাজশাহী

এছাড়া ফসলের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ ১৪ মার্চ ২০২৩ নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার জন্য দিক নির্দেশনা দিয়েছে।
১. যে সমস্ত ফসল পরিপক্ক ও কর্তনযোগ্য সেসব ফসল দ্রুত সংগ্রহ করার জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে কৃষকদের পরার্মশ প্রদান।
২. আম, পেয়ারা, পেঁপেসহ অন্যান্য ফলন্ত গাছে খুঁটি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দেয়ার পরামর্শ প্রদান।
৩. আবহাওয়া দপ্তরের পরার্মশ অনুযায়ী শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় নিরাপদ স্থানে অবস্থান এবং ঘরের বাহিরে না যাওয়া।
৪. দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি হলে তার তাৎক্ষনিক রির্পোট উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট প্রেরন করতে হবে এবং দুর্যোগকালে সকলকে সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে।
৫. উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে কৃষকদের আগমী ১৫ মার্চ থেকে ১৯ মার্চের মধ্যে কালবৈশাখীর আশঙ্কার সর্তকতামূলক তথ্য মাঠে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুত থাকা।

Leave a Reply