পরিস্থিতি প্রতিবেদন- ২৮ ২৫ অক্টোবর ২০২৩
গতকাল (২৪/১০/২০২৩) বাংলাদেশে কক্সবাজার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ আঘাত হানে। এতে ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙ্গে যাওয়া এবং কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের সাথে যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ হওয়াসহ কক্সবাজার জেলায় দেয়াল চাপা পড়ে দুইজন এবং গাছচাপায় একজন নিহত আর গাছপালা ভেঙ্গে ও টিনের চাল উড়ে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় সংকেত নিয়ে বিভ্রান্তি
ঘূর্ণিঝড় হামুন গতকাল রাতে (২৪ অক্টোবর) উপকূলীয় অঞ্চল অতীক্রম করেছে। ২২ অক্টোবর পশ্চিম মধ্য বঙ্গপোসাগর এবং তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গপোসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি নিম্নচাপ পরিণত হওয়ার পর থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের সিগন্যাল দ্রুত বাড়ানো হয়েছে। লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় ঘোষণা এবং সতর্ক সংকেতগুলো দ্রুত দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে,
২২/১০/২০২৩ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য ১ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।
২৩/১০/২০২৩ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য ১ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।
২৪/১০/২০২৩ অক্টোবর সকাল ৬টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৮ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে দেশের কক্সবাজার উপকূল এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।
২৪/১০/২০২৩ সকাল সাড়ে ৯টায় ১০ নম্বর এবং বিকাল ১ টায় ১১ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে মোংলা বন্দরকে ৫ নম্বর, কক্সবাজার ৬ নম্বর, এবং উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরসহ ভোলা ও তার অদূরবর্তী দ্বীপ-চরগুলো ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় নিয়ে আসা হয়।
২৪/১০/২০২৩ বিকেল সাড়ে ৪টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১২ নম্বর এবং সর্বশেষ সন্ধ্যা ৭টায় ১৩ নম্বর ও ১৪ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরকে ৭ নম্বর, কক্সবাজারকে ৬ নম্বর সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর এবং পায়রা ও মোংলাকে ৫ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী এবং উপকূলীয় চর ও দ্বীপ গুলোকে ৭ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর ও সার্ক আঞ্চলিক আবহাওয়া সেন্টারের বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার সকালে অতিক্রম করার কথা। দুটি সংস্থার বুলেটিনে এত পার্থক্য কেন? বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি দ্রুত উত্থান হয়েছে এবং আবার দ্রুত পতন হয়েছে। অর্থাৎ হঠাৎ এর গতিবেগ বেড়ে গিয়েছিল কিন্তু পরবর্তীকালে দুপুরের পর এর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায় এবং সাগরে তা শক্তি হারিয়ে ফেলে। ফলে প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে সাধারণ ঘূর্ণিঝড় আকারে আঘাত করে।
টাইড ফোরকাস্টের তথ্য অনুযায়ী গতকাল ঘূর্ণিঝড় আঘাতহানার সময় কক্সবাজারে জোয়ার শুরু হচ্ছিল তখন পানির উচ্চতা ছিল প্রায় ৯.১ ফুট। ঘূর্ণিঝড় হামুনের দুই ঘণ্টার তাণ্ডবে কক্সবাজারে ৩০ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি-দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েক কিলোমিটার বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে, উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের অসংখ্য খুঁটি। হাজার হাজার গাছপালা ভেঙে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে আজ বুধবার দুপুর ৩ টা পর্যন্ত শহরের বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ আছে।