‘নদী ভাঙ্গন’ নিয়ে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় লিখেছেন গওহার নঈম ওয়ারা (প্রকাশ: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩)
১৯৮৮ সালে ভয়াবহ বন্যার পর ধনী দেশগুলোর উদ্যোগে দেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। সরকারের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস ২০০৪ সাল থেকে দেশব্যাপী নদীভাঙনের পূর্বাভাস দিয়ে আসছিল। এতে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি সময়মতো পূর্বাভাস দিচ্ছে না। এতে নদীভাঙনপ্রবণ এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এবার বর্ষায় বৃষ্টি কম। ভরা বর্ষায় কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি হয়নি। ধান লাগানো, পাট কাটা, জাগ দেওয়ার সময়ে হেরফের হয়েছে। বৃষ্টির অভাবে সেচ দিয়ে অনেক দেশের অনেক জায়গায় চাষিদের আমন লাগাতে হয়েছে। বৃষ্টি কম হলেও কিন্তু বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙন বন্ধ নেই। প্রায় সব নদীতেই ভাঙন চলছে।
গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, গত জুলাইয়ে সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে উপজেলার মেঘাই ১ নম্বর স্পারের উত্তর পাশ থেকে প্রায় ১০০ ফুট ভেঙে যমুনায় বিলীন হয়ে যায়। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদীতীরবর্তী সদর উপজেলা, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর ও এনায়েতপুরে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। বেলকুচির খিদ্রচাপড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন যমুনার গর্ভে চলে গেছে। সিরাজগঞ্জ সদরের কাওয়াকোলা, বেলকুচি, শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুড়ী ইউনিয়নের হাটপাচিল এবং চৌহালীতে যমুনার ভাঙন বন্ধই হচ্ছে না।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার ৪২ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ২০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে গত এক মাসে ঘরবাড়ি, ভিটেমাটিসহ ফসলি জমি হারিয়েছে পাঁচ শতাধিক পরিবার। রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের সরিষাবাড়ী, খিতাবখা, বুড়িরহাট ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি, কালিরপাঠসহ অনেক গ্রাম তীব্র ভাঙনের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে উলিপুর উপজেলার বজরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
গত ৩১ আগস্ট চিলমারী থেকে আবু হানিফের ফোন আসতে থাকে বারবার। আসলে তিনি ২৭–২৮ আগস্ট থেকেই আমাকে ফোনে যোগাযোগের প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। তাঁর আশঙ্কা হচ্ছিল, চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল এলাকার বাঁধ বোধ হয় টিকবে না। এই বাঁধ রক্ষা করতে না পারলে ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক এলাকা ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়বে। ফসলি ও বসতি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হবে কয়েক শ পরিবার।
আমাদের কাছে নদীভাঙনের আগাম খবর আছে কি না, সেটা জানতে আবু হানিফের এত পেরেশানি। বারবার ফোন করে যাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত আবু মিয়ার আশঙ্কাই সত্যি হয়ে গেল। কথিত এলাকায় প্রায় ৩০ মিটার অংশজুড়ে ধস এখন ‘দৃশ্যমান’। অথচ মাত্র বছর কয়েক আগে ২০১৭ সালে উলিপুর উপজেলার অংশ থেকে চিলমারী পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের ডান তীরে প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তীর রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো। এতে তখন তাদের খরচ হয়েছিল প্রায় ২৪৪ কোটি টাকা।
পাউবোর স্থানীয় নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন সংবাদকর্মীদের গত ৩১ আগস্ট বলেছিলেন, বাঁধে হঠাৎ ধস দেখা দেওয়ায় ওই অংশে ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বালুভর্তি প্রায় এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।
প্রকৌশলী আরও বলেছিলেন, গত কয়েক বছর পানিপ্রবাহ প্রকল্প এলাকা থেকে কিছুটা দূরে থাকলেও চলতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবাহ চিলমারী অংশে ডান তীরের কাছাকাছি চলে এসেছে। তীরের কাছে নদের গভীরতা আকস্মিক বেড়ে গেছে। এ কারণে ভাঙন তীব্র হয়েছে।
চিলমারীর আবু হানিফ পাউবোর সব কথা মানতে রাজি। কিন্তু নদীভাঙনের ক্ষেত্রে ‘হঠাৎ’, ‘আকস্মিক’—এসব বুজরুকি শব্দ একদম মানতে রাজি নন। তিনি জানেন শুধু এই বছর নয়, আগামী বছরও কোন নদী কোথায় বাঁক নেবে আর কোথায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে, তার আগাম খবর নেওয়ার তাকত আমাদের দেশের নদীবিজ্ঞানীদের আছে এবং তাঁরা তার এই চর্চা করেও থাকেন।
নদীভাঙনের পূর্বাভাস নিয়ে কারা কাজ করেন
গত শতাব্দীর ১৯৮৮ সালে দেশের ভয়াবহতম বন্যার পর সারা পৃথিবীর মানুষ বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে থাকে। তখন ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডি ছিলেন তৃতীয় বিশ্বের বিশেষ বন্ধু দেনিয়েলা মিতেরাঁ। তিনি তাৎক্ষণিক বন্যাদুর্গত মানুষকে সহায়তার পাশাপাশি বাংলাদেশে ভয়াবহতম ওই বন্যার কারণ ও প্রকৃতি নির্ণয় এবং ভবিষ্যতে বন্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে একটি রূপরেখা প্রণয়নের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষার প্রস্তাব করেন। এই সমীক্ষা সংক্ষেপে ফ্যাপ (এফএপি) নামেই অধিক পরিচিত।
১৯৮৯ সালের জুলাইয়ে প্যারিসে অনুষ্ঠিত জি-৭ শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশে পুনঃপুন সংঘটিত বন্যার ব্যাপারে ধনী দেশগুলোর নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের বন্যা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে, বন্যা নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা প্রণয়নে সমন্বয় করার দায়িত্ব নেয় বিশ্বব্যাংক।
১৯৮৮ সালের বন্যার পর পরিচালিত কয়েকটি সমীক্ষা থেকে সরকার দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোগ হিসেবে কাঠামোগত প্রতিরোধ কার্যক্রম নীতি গ্রহণ করে। বন্যা প্রতিরোধের লক্ষ্যে ছয়টি মূলনীতি গ্রহণ ও সেগুলো অনুসরণের সিদ্ধান্ত হয়। ভবিষ্যতে সব ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়নের ভিত্তি হিসেবে সরকার ১১টি নির্দেশনামূলক মূলনীতিও প্রণয়ন করে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৯৯১ সালে ‘এফএপি’-এর ১৬ এবং ১৯ নম্বর গবেষণার আওতায় পরিচালিত হয় পরিবেশগত ও জিআইএস প্রকল্পসমূহ, পরে যেগুলোকে নিয়ে সমন্বিতভাবে ১৯৯৫ সালে একটি প্রকল্প দাঁড় করানো হয়। ওই প্রকল্প ‘এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিআইএস সাপোর্ট প্রজেক্টস ফর ওয়াটার সেক্টর প্ল্যানিং’ (ইজিআইএস) নামে পরিচিতি লাভ করে।
নেদারল্যান্ডস সরকারের আর্থিক সহায়তায় এবং বাংলাদেশ সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত ইজিআইএস প্রকল্পটিকে ১৮৮২ সালের ট্রাস্ট আইনের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত ইনস্টিটিউট হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০০২ সালের ১৬ মে ‘সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস’ (পরিবেশগত ও ভৌগোলিক তথ্যসেবা কেন্দ্র—সিইজিআইএস) প্রতিষ্ঠা করা হয়। ‘স্বায়ত্তশাসিত’ এই প্রতিষ্ঠান ২০০৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বেশ সুনামের সঙ্গে নদীভাঙনের পূর্বাভাস দিয়ে আসছে। সংস্থাটির পরামর্শক মমিনুল হক সরকারের উদ্ভাবিত এই পূর্বাভাসের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মিলে যায়।
২০২২ সালে সিইজিআইএসের পূর্বাভাস ছিল, দেশের ১৬টি এলাকায় নদীভাঙন বেশি হবে। সেখানে প্রায় ২৩ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়তে পারে। তাদের ভাঙনপ্রবণ সেসব এলাকার মধ্যে ছিল সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনিকটা, কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলা, টাঙ্গাইলের নাগরপুর ও সলিমাবাদ চর, পদ্মা নদীর অংশে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট ও রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা। এসব এলাকা তীব্র ভাঙনের কবলে পড়তে পারে বলে তাদের পূর্বাভাসে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল।
সিইজিআইএসের পূর্বাভাসে উল্লেখ করা এসব এলাকায় বেশ কিছু স্থানে ইতিমধ্যে ভাঙন শুরু হয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছর জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, মানিকগঞ্জ, পাবনা ও ফরিদপুরে নদীভাঙন হবে। বিলীন হবে কমপক্ষে ৩৬৫ হেক্টর বসতি এলাকা। এ ছাড়া ৫ হাজার ৪০০ মিটার সড়ক, ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৩টি হাটবাজার, ২৯টি মসজিদ, ২টি সরকারি ভবন, ১টি বেসরকারি সংস্থার কার্যালয় ও ৩টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নদীভাঙনের শিকার হবে। বছরের শেষে তাদের এসব পূর্বাভাস অনেকটাই মিলে গেছে।
বছর কয়েক আগে সম্ভবত ২০১৭ সালে আমরা যখন শরীয়তপুর এলাকায় নদীভাঙনের পূর্বাভাস নিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে যাই, আর বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভাঙনের সম্ভাব্য এলাকা চিহ্নিত করতে লাল আর হলুদ পতাকা গাড়ার ব্যবস্থা করি, তখন ওই এলাকায় নদী বেশ দূরে ছিল। স্থানীয় মানুষ তখন বিশ্বাস করেননি। তাঁরা বলেছিলেন, ‘এসব কেয়েম (স্থায়ী) এলাকা, শত বছরের বসতি। তোমরা ভুল করছ, আমাদের সময় নষ্ট করছ।’
স্থানীয় প্রশাসন, পাউবোর কর্মকর্তা সবাই জানিয়েছিলেন, ‘আমরা কোনো চিঠি পাইনি। অতএব সবটাই ভুয়া। এনজিওদের নতুন ধান্দা।’
তখন আমরা কাজ করে চলে এসেছি। তারপরের ঘটনা সবার জানা, মানুষ বসে বসে নদীভাঙন দেখেছে। অসহায়ের মতো বসতবাড়ি, জায়গাজিরাত নদীগর্ভে বিলীন হতে দেখেছে। সব হারিয়েছে। এখানে বলে রাখা ভালো, বাংলাদেশের মডেল অনুসরণ করে ভারত, মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়া নদীভাঙনের পূর্বাভাস পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করেছে। তারা নিজেদের দেশে নদীভাঙনের পূর্বাভাস দিচ্ছে।
সিইজিআইএস সম্পর্কে আবু হানিফ কীভাবে জানলেন
সিইজিআইএস ২০০৪ সালে কাজ শুরু করেছিল। তারপর তাদের সঙ্গে মিলে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) নদীভাঙনের পূর্বাভাস মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। নির্বাচিত এলাকায় স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলা, লাল–হলুদ পতাকার মাজেজা সম্পর্কে তাদের বোঝানো—এসব কাজে সিইজিআইএসের সঙ্গে যুক্ত হয় ইউএনডিপি। ইউএনডিপি পাশে দাঁড়িয়েছিল আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে।
চিলমারীর আবু হানিফ সেই তখন থেকে চেনে সিইজিআইএসকে। তাঁর ভাষায়, এই প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ‘আগাম সতর্কতা জানানো’র অফিস। ইউএনডিপি বেশ কয়েক বছর পর প্রকল্পের আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। তারপর কখনো অক্সফাম, কখনো ব্র্যাক কখনো কেয়ার তাদের নিজ নিজ কর্ম এলাকায় সীমিত আকারে জনগণের কাছে নিজ নিজ তরিকামতো ভাঙনের পূর্বাভাস পৌঁছানোর কাজটি করেছে বা করে যাচ্ছে। এদের সবার অভিজ্ঞতাই ইতিবাচক।
মানুষ আগেভাগে নদীভাঙনের পূর্বাভাস পেলে তারা আগাম ব্যবস্থা নিতে পারে। তাদের ক্ষয়ক্ষতির পাল্লাটা কমিয়ে আনতে পারে। ফসল করা বা না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সময় নিয়ে গবাদিপ্রাণীসহ নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারে। শুনতে খারাপ লাগলেও সবচেয়ে লাভ হয় ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর।
আবু হানিফরা এখন কেন খবর পান না
পরিকল্পনামতো সিইজিআইএস এখনো বছরের শুরুতে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরের মৌসুমের ভাঙনের পূর্বাভাসের খসড়া চূড়ান্ত করে ফেলে। মানুষের কাছে আগে মার্চ-এপ্রিলের মধ্যেই তাদের এই পূর্বাভাস পৌঁছানো যেত।
সর্বশেষ ২০১৯ সালে সময়মতো অর্থাৎ এপ্রিলের মধ্যে (৪ এপ্রিল) মানুষের জন্য তাদের পূর্বাভাস উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পরের বছর ২০২০ সালে উন্মুক্ত করা হয় ১৯ জুন। ২০২১ সালে উন্মুক্ত করা হয় ৬ জুন। ওই দুই বছর করোনার কারণে বিলম্ব হয়েছে বলে অজুহাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালে কেন বিলম্ব হলো। তখন তো আর করোনার প্রাদুর্ভাব সেভাবে ছিল না।
অথচ গত বছরের পূর্বাভাস জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় আরও পরে, ৯ সেপ্টেম্বর। হায়! তত দিনে নদীভাঙনে মানুষের নাকাল অবস্থা।
আর চলতি বছর মন্ত্রণালয়ের এখনো পূর্বাভাস প্রকাশ করার ফুরসত হয়নি। হয়তো অনুষ্ঠানের অতিথি, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি বা অতি বিশেষ অতিথির তালিকা ঠিক হয়নি। কে পড়বেন, কে বলবেন, কারা শুনবেন, সেটা ঠিক করা যায়নি।
মন্ত্রণালয় আদতে সিইজিআইএসের পাঠানো তথ্যের খামটা খুলেছেন কি না, সেটা নিয়েও সমালোচকেরা অনেকটা সন্দিহান।
নদীভাঙনের পূর্বাভাস সময়মতো জানার অধিকার মানুষের রয়েছে। দেশটা মানুষের, আইন মানুষের জন্য। আইনের জন্য মানুষ নয়। আমাদের এই আমলাতন্ত্র সেটা কবে বুঝবে। আমলাতন্ত্রের প্রবক্তা ম্যাক্স ওয়েবার মানুষের কল্যাণের জন্য একটা স্বচ্ছ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বারবার মাথা কুটেছেন। সেটা কবে হবে?