পরিস্থিতি প্রতিবেদন ০৪ ডিসেম্বর ২০২২
নিউমোনিয়ায় শিশু মারা যাচ্ছে
বাংলাদেশে এখনো পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ নিউমোনিয়া।নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। নভেম্বর ও ডিসেম্বর নিউমোনিয়ার মৌসুম।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এর তথ্য অনুযায়ী শনিবার (৩ ডিসেম্বর, ২০২২) সকাল ১০টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত দুই দিনে নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় অন্তত ২৫ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ৬২৩ জন শিশু ভর্তি হয়েছে যাদের অধিকাংশই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, শিশুদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ওষুধসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর চাপ বাড়ছে।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল এবং ইনস্টিটিউট এর তথ্য গত মাসের (অক্টোবর, ২০২২) চেয়ে নভেম্বরে নিউমোনিয়ার আক্রান্তের সংখ্যা ১০% বেড়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউমোনিয়া এবং ব্রঙ্কাইটিস রোগীদের নিয়ে সব শিশু ওয়ার্ডে চাপ রয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের এক এক শয্যায় প্রায় পাঁচজন করে শিশু রোগী রয়েছেন । যশোরের ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নভেম্বরের (২০২২) প্রথম ১৩ দিনে ৭৯০ জন ভর্তি হয়েছিল এবং প্রায় ৩০০০ শিশু রোগী বহির্ভাগের ভিতর চিকিৎসা নিয়েছিল। হাসপাতালে ২৪ শয্যার বিপরীতে প্রায় ৬১ শিশু রোগী ভর্তি হয়। অনেক রোগী টয়লেটের সামনে মেঝেতে বসেও চিকিৎসা নিচ্ছেন। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, ভর্তি শিশু রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তিনগুণ বেশি। শরীয়তপুরেও একই অবস্থা, এখন পর্যন্ত প্রায় ৯৫১ শিশু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৭৫ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে ২০ শয্যার বিপরীতে যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তিনগুণ বেশি। এ বিষয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ হচ্ছে, অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন না হয়ে তাদের শিশুদের সাবধানে রাখতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইতোমধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে বাবা-মা প্রায়ই তাদের সন্তানদের শেষ মুহূর্তে হাসপাতালে নিয়ে যান, বিশেষ করে যখন তাদের অক্সিজেন সহায়তার মতো গুরুতর সাহায্যের প্রয়োজন হয়।
বেশিরভাগ নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন দিয়ে প্রতিরোধ করা যায়। বাংলাদেশে এক বছর বয়সীদের একটি ছোট অংশ এখনও ভাইরাল নিউমোনিয়ার জন্য টিকাবিহীন আছে।
শিশুদের সুস্থ রাখার জন্য করণীয়
১. সদ্যজাত শিশুদের ও মাকে ঠান্ডা পানিতে গোসল করানো যাবে না।
২. শিশুদের হাত ও পায়ে মোজা, গায়ে সোয়েটার ও মাথায় টুপি এবং পরিষ্কার কাপড় পরাতে হবে।
৩. জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শিশুকে বাড়ির বাইরে নেওয়া যাবে না।
৪. ছয় মাসের কম বয়সী শিশুকে বার বার বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
৫. ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুকে বুকের দুধের পাশাপাশি পরিপূরক খাবার খাওয়াতে হবে।
৬. প্রয়োজনে শিশুকে হাল্কা গরম পানি দিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে গোসল করাতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ দৈনিক পত্রিকাসমূহ ।