বজ্রপাত থেকে রক্ষায় করণীয় সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইয়াসির আরাফাত বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমানোর জন্য ৩০-৩০ নিয়মের দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। ৩০-৩০ নিয়মঃ প্রথম বজ্রপাতের ঝলকানি দেখা/ শব্দ শোনা মাত্র ঘড়ি, মোবাইল, বা স্টপওয়াচ অথবা হাতের আঙ্গুল এর সাহায্যে ৩০ পর্যন্ত গণনা করে একটা পরিমাপ নিতে হবে। ঝলকানি দেখা ও শব্দ শোনার মাঝে যদি ৩০ সেকেন্ড বা তারচেয়ে কম সময় থাকে তাহলে জীবন বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ে (পানিরোধী ছাদযুক্ত, শুকনা ফ্লোর বিশিষ্ট এবং বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা যুক্ত স্থাপনা) অবস্থান করা । যতক্ষণ বজ্রপাত চলবে ততোক্ষণ নিরাপদ আশ্রয়ের অভ্যন্তরে থাকা আর বজ্রপাত থেমে গেলেও অতিরিক্ত আরও ৩০ মিনিট নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করা আর লক্ষ্য করা বজ্রপাত বন্ধ হয়েছে নাকি যদি বজ্রপাত আবারও শুরু তাহলে নিরাপদ আশ্রয়ের অভ্যন্তরে থাকা।
· এপ্রিল-জুনে বজ্রপাত বেশি হয়। এ সময় আকাশে মেঘ দেখা গেলে ঘরে অবস্থান করতে হবে ।
· পাকা বাড়ির নিচে আশ্রয় নিন, ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু জায়গায় না থাকাই ভালো। ফাঁকা জায়গায় কোনো যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার আশংকা অত্যন্ত বেশি থাকে।
· এ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো হয় যদি কোনও দালানের নিচে আশ্রয় নেয়া যায়। প্রতিটি ভবনে বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে।
· উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাত হলে উঁচুগাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের আশংকা বেশি থাকে। গাছ থেকে চার মিটার বা প্রায় ৯ হাত দূরে থাকতে হবে।
· খোলা স্থানে অনেকে একত্রে থাকার সময় বজ্রপাত শুরু হলে প্রত্যেকে৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে সরে যেতে হবে।
· জানালা থেকে দূরে থাকুন বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।
· ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলুন, বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং,পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করবেন না। বজ্রপাতের সময় এগুলোর সংস্পর্শ এসে অনেকে আহত হন।
· টিভি-ফ্রিজ থেকে সাবধান, বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের আভাষ পেলে আগেই এগুলোর প্ল্যাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্ল্যাগ আগেই খুলে রাখুন।
· বজ্রপাতের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করুন। যদি প্রচন্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টির সম্মুখীন হন তবে গাড়ি কোনো গাড়ি বারান্দা বা পাকা/কংক্রিটের ছাউনির নিচে নিয়ে যান। এ সময় গাড়ির কাঁচে হাত দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
· বজ্রপাত অব্যাহত থাকলে সে সময় রাস্তায় বের না হওয়াই মঙ্গল। এই সময় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে দুর্ঘটনার আশংকা থাকে, উপরন্তু কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়লে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হওয়ার আশংকা থেকে যায়।
· কালো মেঘ দেখা দিলে নদী, পুকুর, ডোবা, জলাশয় থেকে দূরে থাকুন। মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।
· বজ্রপাতের সময় শিশুদের খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন এবংনিজেরাও বিরত থাকুন।
· খোলা মাঠে থাকলে পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে পড়ুন।
· খালি পায়ে বা পা খোলা জুতো নয়, বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। যদি একান্ত বেরোতেই হয় তাহলে পা ঢাকা জুতো পড়ে বের হোন। রবারের গাম্বুট এ ক্ষেত্রে সব থেকে ভালো কাজ করবে।
· বজ্রপাতের সময় রাস্তায় চলাচলের সময় আশেপাশে খেয়াল রাখুন। যে দিকে বাজ পড়ার প্রবণতা বেশি সে দিক বর্জন করুন।
· বজ্রপাতে যত বেশি মানুষ নিহত হয় তার চেয়েও বেশি আহত হয়। দ্রুত আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
Pingback: ঈদের ছুটিতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা – Disaster Forum
Pingback: বজ্রপাতের হালনাগাদ তথ্য – Disaster Forum
Pingback: ছুটি কাটুক আনন্দে: প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা - Disaster Forum
Pingback: চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলার স্বস্তির বৃষ্টি - Disaster Forum