ভূমিকম্পের সময় করণীয়


সাধারণ নাগরিক হিসেবে সকলেরই কিছু বিষয় জেনে রাখা উচিত। ভূমিকম্পের সময় মোটেই আতঙ্কিত না হওয়া এর মধ্যে প্রথম। এই দুর্যোগে রক্ষা পেতে যা করতে হবে;
• ভূমিকেম্পের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে বাড়িতে একটি প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র (টর্চ বা মোমবাতি, টাকা বা এটিম কার্ড) হাতের কাছে, সবার নজরে থাকে এমন জায়গায় রাখুন।
• ভূমিকম্পের স্থায়িত্ব কয়েক সেকেন্ড হতে সর্বোচ্চ মিনিট খানেক পর্যন্ত হতে পারে। এই সময়ে ঘরে অবস্থান করলে টেবিল বা ডেস্কের নিচে বিশেষ করে ঘরের বীম-এর অবস্থান নিন। আপনার মাথায় কোনোকিছুর আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা পাবেন।
• ভূমিকম্পের সময় আগুন লাগা থেকে রক্ষা পেতে যত দ্রুত সম্ভব রান্না ঘরের গ্যাস, তেল বা ইলেকট্রিক চুলা বন্ধ করুন।
• তাড়াহুড়ো করে বাইরে বের হবেন না, ভূমিকম্পের সময় তাড়াহুড়ো করে বাইরে বের হতে গেলে ভিড়ে চাপা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ভূমিকম্পের আফটার শক কয়েকবার হয়, ফলে দুর্ঘটনার আশংকা বেশি থাকে।
• দালানে বসবাসকারীদের প্রধান সমস্যা হয় ভূমিকম্পের সময় দরজা আটকে বন্দি হয়ে যাওয়া। এইজন্য বাহির থেকে দরজা খোলার ব্যবস্থা রাখা উচিত।
বাড়ির তাক, আলমারি ইত্যাদির উপর জিনিস রাখা উচিত নয়। ভূমিকম্পের সময় এগুলো পড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে।
• বাইরে বের হবার সময় অনেকেই ওপর হতে কোনো কিছু পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে থাকেন। এটা এড়াতে মাথার ওপর শক্ত বোর্ড বা ট্রে জাতীয় কিছু ধরে রাখুন। এতে ওপর থেকে কিছু পড়লেও আপনার মাথায় আঘাত লাগবে না। বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় ভূমিকম্প হলে বালিশটি মাথার নীচ হতে মাথার ওপরে আনুন।
• সিনেমা হল, অডিটোরিয়াম, ডিপার্টমেন্ট স্টোর, রেলস্টেশন বা এয়ারপোর্টের মতো পাবলিক প্লেসে থাকলে সেখানে কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের পরামর্শ অনুসরণ করুন।
• ভূমিকম্পের সময় আপনি যদি গাড়ি চালানো অবস্থায় থাকেন তাহলে ধীরে ধীরে আপনার গাড়িটি রাস্তার বামপাশে পার্ক করুন। কোনো অবস্থাতেই ভূমিকম্পের সময় গাড়ি চালাবেন না।
• ভূমিকম্পের সময় আপনার গাড়িটি পাহাড়ী এলাকায় থাকলে ভূমিধ্বস এবং গড়িয়ে পড়া পাথরের আঘাত এড়াতে নিরাপদ স্থানে গাড়িটি পার্ক করুন।
• ভূমিকম্প এলাকা হতে নিরাপদ এলাকায় সরে যাবার জন্য গাড়ি ব্যবহার করার চেয়ে পায়ে হাঁটা অনেক নিরাপদ।

ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়লে করণীয়
• ধূলাবালি থেকে বাঁচার জন্য আগেই সাথে রুমাল বা তোয়ালে বা চাদরের ব্যবস্থা করে রাখুন। ম্যাচ জ্বালাবেন না। দালান ধ্বসে পড়লে গ্যাস লিক হয়ে থাকতে পারে।
• চিৎকার করে ডাকাডাকি শেষ উপায় হিসেবে বিবেচনা করুন। কারণ, চিৎকারের সময় মুখে ক্ষতিকারক ধূলাবালি ঢুকে যেতে পারে। পাইপে বা ওয়ালে বাড়ি দিয়ে বা মুখে শিস বাজিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতে পারেন। তবে ভালো হয় সাথে যদি একটি রেফারির বাঁশি বা হুইসেল থাকে, তার প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন আগেই।

Leave a Reply