মনের স্লেট থেকে সিলেট যেন মুছে না যায়

প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত সিলেট অঞ্চলের বন্যা এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ওপর আর্টিকেল। লিখেছেন গওহার নঈম ওয়ারা।

বন্যার্ত মানুষকে এখন দ্রুত ঘরে ফেরানো দরকার। পুনর্বাসনে স্থানীয় মানুষ ও সংগঠনকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ত্রাণবণ্টন নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে।

বন্যার কষ্ট কত দিনে শেষ হবে, কেউ বলতে পারছে না। ১৬ জুলাই রাতে প্রায় দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে সিলেট শহর আবার তলিয়ে যায়। জলনিকাশি ব্যবস্থা কাজ করেনি। আগের দিন একজন নালায় জমে থাকা বর্জ্য পলিথিন আর প্লাস্টিকের ছবি ফেসবুকে দিয়ে লিখেছিলেন, ‘যদি নিজেরাই সচেতন না হই, এভাবেই বারবার ডুবতে হবে আমাদের।’ তাঁর কথা অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেছে। বৃষ্টির পানি যাওয়ার পথ নেই। ঘরে ঘরে পানি উঠেছে।

দোকানের মালামাল পানিতে নষ্ট হয়েছে। মধ্য জুনের বন্যা এভাবে ফিরে আসবে, কেউ ভাবেনি। শহর সিলেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন মানুষ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি শঙ্কিত। বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের মতোই গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল শহরের নালা থেকে বর্জ্য-পলি অপসারণ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের নালাগুলোর মুখের নেট বন্যায় হারিয়ে গেছে। ময়লা-আবর্জনা আটকের এসব নেট প্রতিস্থাপন খুবই জরুরি। কিন্তু ত্রাণ নাকি পুনর্বাসন আগে—এ তাত্ত্বিক আলোচনার বেড়াজালে এ কাজ আটকে গেছে। একজন মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমরা প্রথমে ত্রাণ, তারপর নির্মাণ—এ নীতির ভিত্তিতে এগোব।’ এসব নিতান্তই ‘বইয়ের ভাষা’। সিলেট অঞ্চলকে দ্রুত আগের পর্যায়ে ফেরাতে হলে পুঁথিগত বিদ্যার বাইরে এসে সৃজনশীল আর বাস্তববাদী হতে হবে।

গত জুনে ভয়াবহ বন্যার পর সুরমা নদীর পানি অনেকটা কমলেও কুশিয়ারার পানি নামছে না। ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের প্রধান সড়কে এখনো নৌকা চলে। দক্ষিণ সুরমা, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জের একাংশ ও ফেঞ্চুগঞ্জবাসীর কষ্ট দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সিলেট শহরে এখনো ২১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১০ হাজার ৮১০ মানুষ রয়েছেন। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের হিসাবমতে, জেলার ৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫ হাজার মানুষ এখনো ঘরে ফিরতে পারেনি।

বলা বাহুল্য, তাদের কাছে শুধু সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের হিসাব আছে। অনেকে আশপাশের প্রতিবেশী বা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলার ৮৮ ইউনিয়নের ২ হাজার ৮৮৮টি গ্রামের গৃহহীন মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছে।

সিলেট অঞ্চলের বন্যার খবর সংবাদপত্রের প্রথম পাতা থেকে ক্রমে ভেতরের পাতায় চলে যাচ্ছে। কিন্তু এক মাস পরও অনেকের বাড়ির চুলা জ্বলেনি। কান পাতলেই শোনা যায়, ‘ঘরে এখনো রান্না অয় না।’ স্কুল খুললেও শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। সিলেটের ৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরুই হয়নি। সুনামগঞ্জে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার ২৫ শতাংশের কম। ত্রাণসামগ্রী বিতরণ এখনো চলছে ‘ফ্রি স্টাইলে’। এখনো চিড়া-গুড় যাচ্ছে ঢাকা থেকে।

তহবিল সংগ্রহ এবং জবাবদিহি

আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে শুরু করে নানা সংগঠন দেশে-বিদেশে বানভাসি মানুষের জন্য অর্থ বা ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করছে। লন্ডনের পাতালরেল থেকে মিয়ামির সি বিচে কোনো না কোনোভাবে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার্ত মানুষের জন্য তহবিল সংগ্রহ চলছে। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক উদ্যোগে অনেকে টাকা তুলছেন। রাজশাহীতে পথে পথে গান গেয়ে টাকা আর ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করে পাঠানো হচ্ছে। ঢাকায় কনসার্ট হয়েছে, আরও হবে নিশ্চয়।

সিলেট ও সুনামগঞ্জের মানুষ, বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান প্রথম দিন থেকেই সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে যা পারছেন, সংগ্রহ করে সেখানে যাচ্ছেন। ত্রাণসামগ্রীর সমুদয় অর্থের চেয়ে অনেকের যাতায়াত আর নিজেদের থাকা-খাওয়ার খরচ বেশি হয়েছে। স্থানীয় বিশ্বাসযোগ্য সংগঠনের তালাশ না থাকা কিংবা সরকারি বিতরণব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা বা আস্থার অভাব থাকায় মানুষ নিজেরাই ছুটে যায়। কারও থাকে দুর্যোগ পর্যটনের (ডিজাস্টার ট্যুরিজম) টান, আবার কারও রবিনহুড হয়ে ওঠার তাড়না।

এখন মানুষ দ্রুত ‘স্বাভাবিক’ জীবন-জীবিকায় ফিরতে চায়। বানভাসি মানুষের দুর্ভোগের ছবি দেখিয়ে, তাদের সেবার কথা বলে কে কত টাকা ওঠালেন আর কীভাবে খরচ করছেন বা করবেন—সেটি বানভাসি মানুষের জানার অধিকার আছে। ত্রাণে নিয়োজিত পক্ষগুলো স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তাঁদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানালে সরকারের পক্ষে এ কাজ সহজ হবে। তবে এটি যেন আবার যন্ত্রণার বা ত্রাণ বিতরণে বাড়তি ঝামেলার কারণ হয়ে না দাঁড়ায়। এ ব্যাপারে সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক থাকতে হবে।

মানুষকে ঘরে ফেরানোই এখন প্রধান কাজ

বন্যায় মানুষের ঘরবাড়ির বেশি ক্ষতি হয়েছে। বন্যার কারণে প্রায় ৭২ লাখ মানুষ বাড়িঘরে থাকতে পারছে না। অনেকেই নিজের গ্রাম ছেড়ে অন্য
গ্রামে আত্মীয়স্বজনের বাসায়, ঘরের বারান্দায়, রান্নাঘরে এমনকি গোয়ালঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। শহর আর শহরতলির স্কুল ও পরিত্যক্ত বা নির্মাণাধীন দালানে যাঁরা উঠেছিলেন, তাঁদের অনেকে সেখানে থেকে গেছেন।

দৈব-দুর্বিপাকে দেশের মানুষ বাস্তুচ্যুত হলে তাঁদের বাড়িঘরে ফেরাতে আন্তর্জাতিক বিধিবিধান আছে। জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের অধিকার সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের নীতিমালা (দ্য গাইডিং প্রিন্সিপাল অন ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট ১৯৯৮) প্রণয়ন করে। জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) বিশ্বব্যাপী অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের দেখভাল করছে। তাদের চাহিদা নিরূপণ এবং টেকসই ও মানসম্পন্ন পুনর্বাসনের অভিজ্ঞতা আছে সংস্থাটির। বাংলাদেশে তারা মূলত কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করে। সরকার সিলেট অঞ্চলের বসতি পুনর্বাসনে আইওএমের টেকনিক্যাল জ্ঞানকে কাজে লাগাতে পারে।

আইওএম সিলেট অঞ্চলের জন্য নিয়োজিত ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনারের সঙ্গে কাজ করবে। দেশে-বিদেশে সংগৃহীত সব তহবিলের হিসাব কমিশনারের অফিসে থাকবে। তিনি এ তথ্য সবার জানার অধিকার নিশ্চিত করবেন।

জবর দর-কষাকষি’র একটা মডেল হতে পারে সিলেট

ইস্তাম্বুলে ২০১৬ সালে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রচলিত মাথাভারী ত্রাণ তৎপরতার মডেল নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। সেখানে ঠিক হয়, ত্রাণ তৎপরতার প্রশাসনিক খরচ কমাতে হবে। ত্রাণ তহবিল দাতা থেকে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছাতে হাতবদলের স্তর কমাতে হবে। যতটা সম্ভব সরাসরি স্থানীয় সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করতে হবে। এতে মানুষ দ্রুত সেবা পাবে এবং ‘ওভারহেড’-এর নামে পদে পদে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় লাগাম টানা যাবে।

এবার সিলেট অঞ্চলে স্থানীয় মানুষ ও সংগঠন সবার আগে ত্রাণসামগ্রী আর উদ্ধারকারী নৌকা নিয়ে ছুটে গেছে। কক্সবাজারে স্থানীয় সংগঠনগুলো ইস্তাম্বুল ঘোষণার আলোকে সেখানে কাজ চালানোর তাগিদ দিয়ে আসছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ত্রাণ কর্মসূচিতে স্থানীয় সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত করলে খরচ যেমন কমবে, তেমনি বাড়বে কাজের গতি। স্থানীয় সংগঠনগুলো ইতিমধ্যে সেটা করে দেখিয়েছে।

তবে ‘গ্র্যান্ড বার্গেইন’ বা ত্রাণ ব্যবস্থাপনার স্থানীয়করণের (লোকালাইজেশন) মানে টাকার ভাগাভাগি নয়। স্থানীয় সংগঠনগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ত্রাণ ব্যবস্থাপনা পেশাদারির সঙ্গে পরিচালনার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। এসব ক্ষেত্রে আইওএমের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনের সহায়তা দরকার। তবে নেতৃত্বে থাকবে সরকার।

মানবিক সংকট মোকাবিলায় স্থানীয় সংগঠনগুলো যথেষ্ট পেশাদারির সঙ্গে কাজ করতে পারে না বলে অনেকের ধারণা। সিলেট অঞ্চলের সংগঠনগুলোকে দেখে তেমন মনে হয়নি। স্থানীয় সংগঠনগুলো যত সহজে চাহিদা নিরূপণ, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ শনাক্ত আর স্থানীয় যোগাযোগের সহজ ও টেকসই ব্যবস্থার দিশা দিতে পারবে, অন্য কেউ সেভাবে পারবে না।

দরকার নিরীক্ষামূলক তদন্ত

এবার সিলেট অঞ্চলের ভয়াবহ বন্যার মতো গত বছরের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়ার সেলানগড় রাজ্যে আচানক বন্যা হয়। ওই রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব জনগণকে বন্যার কারণ জানাতে তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশের নির্দেশ দেন।

তিনি স্বীকার করেন, সতর্কীকরণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে। আমলারা প্রথমে তদন্তের বিষয়ে আমতা-আমতা করলেও পরে মেনে নিয়েছিলেন। খুবই কাজের আর বিশ্বাসযোগ্য এক প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে।

সারা মাসের বৃষ্টি ২৪ ঘণ্টায় হয়েছে বলে আমাদেরও বসে থাকলে হবে না। আমাদের খুঁজে দেখতে হবে, কী পদক্ষেপ নিলে ক্ষয়ক্ষতি আর দুর্ভোগ কমানো যেত। রোল মডেল তৈরি করতে হলে আমাদেরও এ পথে এগোতে হবে।

অভিজ্ঞতা নথিভুক্তকরণ

ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগ এড়াতে বা ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হলে ‘কেন এমন হলো’ এ প্রশ্নের নিরপেক্ষ উত্তর খোঁজা দরকার। কী করলে দুর্ভোগ কম হতো, সে প্রশ্নের জবাব জানা জরুরি। যেসব কর্মকর্তা (ইউএনও, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী, ত্রাণ কর্মকর্তা, বিদ্যুতের কর্মকর্তা, সড়ক ও জনপথের প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রমুখ) এ বন্যা সামলেছেন বা সামলাচ্ছেন, তাঁরা তাঁদের সুপারিশসহ অভিজ্ঞতার কথা লিখে সরকারের কাছে জমা দেবেন। এগুলোই হবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার শিক্ষা আর প্রশিক্ষণের প্রধান উপাদান। প্রতিটি দুর্যোগ আমাদের শেখায়। সেই শিক্ষা সবার কাছে পৌঁছে দেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বণ্টন নীতিমালায় পরিবর্তন প্রয়োজন

সামাজিক সুরক্ষার প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী, একটি সুরক্ষার সুবিধাভোগীরা অন্য সুরক্ষার সুবিধা পান না। যেমন যে প্রবীণ নারী বিধবা ভাতা
পান, তিনি বয়স্ক ভাতা পান না। এ নীতি সাধারণ অবস্থায় চলনসই। কিন্তু দুর্যোগে এ নীতি অনুসরণ করলে গোল বাধে। ত্রাণসামগ্রী বিতরণ বা পুনর্বাসনে জাতীয় পরিচয়পত্রকে (এনআইডি) আমলে নেওয়া হয়। এ বন্যায় অনেকে তাঁদের এনআইডি হারিয়েছেন। তা ছাড়া দেশের শতভাগ মানুষের যে এনআইডি আছে, সেটি হলফ করে বলা যাবে না। প্রান্তিক জনপদে ক্ষেত্রবিশেষে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ মানুষের এনআইডি নেই বলে অনেকের ধারণা। বন্যাকবলিত অঞ্চলের এসব মানুষ যেন কোনোভাবে ত্রাণ বা পুনর্বাসন থেকে বাদ না পড়েন, তার একটি উপায় খুঁজে বের
করতে হবে।

সিলেট অঞ্চলে অন্য জেলা থেকে যাওয়া খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। শহর, শহরতলি, পাথরের কোয়ারি এলাকায় তাঁদের বসতি বেশি। প্রাথমিক ত্রাণসামগ্রী বিতরণে তাঁরা বৈষম্যের ফাঁদে না পড়লেও পুনর্বাসনের তালিকায় তাঁদের বাদ পড়ার আশঙ্কা আছে।

অতীত অভিজ্ঞতা বলে, প্রথম দিকের পুনর্বাসন প্যাকেজের চেয়ে পরের প্যাকেজগুলো সুচিন্তিত ও উপযোগিতাভিত্তিক হয়, আর্থিক মূল্যও বেশি থাকে। বণ্টনের সময় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আর প্রান্তিক মানুষকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। ফলে দেখা যায়, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষটির ভাগ্যে জুটছে কম মূল্যের প্যাকেজ আর দেরিতে পাওয়ায় অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা পাচ্ছেন মূল্যবান প্যাকেজ।

যেমন এখন যাঁরা নির্মাণসামগ্রী হিসেবে বাঁশ আর কয়েক বান টিন পাচ্ছেন, তাঁরা পরের প্যাকেজ পাচ্ছেন না। সে প্যাকেজে হয়তো থাকবে আরসিসি পিলারসহ উঁচু ভিটায় ঘর করার সহযোগিতা। তাই পুনর্বাসন প্যাকেজের একটা ন্যূনতম মানদণ্ড ঠিক করা উচিত।

ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ভিন্ন কাঠামোর কথা ভাবতে হবে

১০ মাসের মধ্যে সিলেট অঞ্চলকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের প্রশাসনিক কাঠামোয় পরিবর্তন আনতে হবে। অতীতের মতো সচিব পদমর্যাদার একজনকে ত্রাণ পুনর্বাসন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া যায়।

নিত্যদিনের প্রশাসনিক ঝুট-ঝামেলা তাঁকে স্পর্শ করবে না। তাঁর জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতনদের নিয়ে একটা টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কাজ সহজ হবে। ‘ঘরে এখনো রান্না অয় না।’—এই বুকফাটা বিলাপের মর্ম আমরা কবে বুঝতে পারব?

Leave a Reply