শীতে গরম পানি ব্যবহার এবং আগুন পোহানোর সময় সতর্কতা

সতর্কতা বার্তা ৮ ০৪ জানুয়ারি ২০২৪

ডিসেম্বর মাস ২০২৩ সাল থেকে চলতি বছর (৪ জানুয়ারি ২০২৪) এখন পর্যন্ত শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে ৫ জন মারা গিয়েছে। জামালপুর, কক্সবাজার, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম এবং নীলফামারীতে আগুন পোহাতে গিয়ে নিহত সবাই নারী।

এই শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে নিহতের পাশাপাশি গরম পানিতে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি। গরম পানিসহ উষ্ণ তরলে দগ্ধ হয়ে নভেম্বর ২০২৩ সালে ঢাকা মেডিকেল ভর্তি ৭৬৪ জন এর মধ্যে ৪৫৬ জন গরম পানিসহ উত্তপ্ত তরলে দগ্ধ শিশু ৩৬৫ জন।

শীতের সময় অন্যতম একটি প্রধান সমস্যা দেখা যায় শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে আগুন পোহানোর সময় দগ্ধ হন অনেকে। শীতে সাধারণত নারী, শিশু এবং প্রবীণদের দগ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে অসতর্ক অবস্থায় আগুনের কাছে যাওয়া কিংবা গরম পানিতে হাত দিয়ে ফেলা এবং নারীদের ক্ষেত্রে শাড়ির আঁচল, চাদর, উলের চাদরের মতো কাপড়ে আগুন লাগলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। কখনও কখনও গরম পানি দিয়ে গোসলের সময় পানি মাত্রাতিরিক্ত গরম থাকায় তাতেও দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটতে পারে। আগুন লাগার পরে তাৎক্ষণিক কি করতে হবে তা বেশিরভাগ মানুষ বুঝতে পারে না। ব্যবস্থা নেয়ার আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরনে থাকা উলের তৈরি সোয়েটার, লেপ, কাঁথা বা কম্বল এমন ভারী কাপড়ে অনেক দ্রুত আগুন ছড়ায় এবং তার তীব্রতা বেশি থাকে। ফলে পুড়ে যাওয়ার মাত্রাও তুলনামূলক বেশি হয়। গরম পানির ব্যবহার ও আগুন পোহানোর সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে এই দুর্ঘটনার হার কিছুটা কমানো যাবে।

শীতের গরম পানি ব্যবহার ও আগুন পোহাতে গিয়ে মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে করণীয়-
• শীতের সময় সাধারণত গরম পানির ব্যবহার অনেক বেড়ে যায়, এই সময় শিশুদের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে শিশু ও প্রতিবন্ধীদের গোসলের পানি বা অন্যান্যদের গোসলের গরম পানি ইত্যাদির কাছাকাছি যেন না যায় তা খেয়াল রাখতে হবে। গরম হাঁড়ি শিশুর নাগালের বাইরে উঁচু স্থানে রাখতে হবে।
• গরম পানি বহন করার সময় শিশুদের আগে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। গরম পানি হাঁড়িতে বহন না করে বালতিতে বহন করা ভালো।
• শীত সহ্য করতে না পেরে বাড়ির পাশেই খড়ের মধ্যে আগুন ধরিয়ে তাপ নেন অনেকে। এমন সময় নারীদের শাড়ির আঁচল কিংবা ওড়নায় আগুন লেগে গেলে তা বোঝা যায় না। এই ক্ষেত্রে শাড়ি বা ওড়না ভালোভাবে পেঁচিয়ে রাখতে হবে।
• শীতের মধ্যে এলাকার কিশোর বালকরা মিলে কৃষকের খড়ের গাদার পাশে আগুন জ্বেলে তাপ পোহাতে গিয়ে সেই গাদা পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। কৃষকের জন্য এ ক্ষতি অপূরণীয়। কৃষকের খড় যেখানে আছে তার থেকে দূরে আগুন পোহালে ভালো। সম্ভব হলে আশেপাশে কৃষকের খড় বা কারো ঘর নাই এমন স্থানে আগুন পোহানো ভালো।
• আগুন পোহানো হয়ে গেলে আগুন ভালোভাবে নিভিয়ে দিতে হবে। অজান্তে কোন ব্যক্তি বা প্রাণী সেখানে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
• যারা বার্বিকিউ পার্টি করবেন তারা যতোটা সম্ভব সাবধানে সেটা করবেন। কাজ হয়ে গেলে নিশ্চিত হোন আপনার ফায়ার প্লেসের আগুন পুরোপুরি নিভেছে কি-না। সামান্য আগুনের ফুলকা থেকেও বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
• এছাড়া অনেক সময় গরম কাপড় শুকানোর জন্য চুলার উপর দড়ি টেনে কাপড় শুকানোর ব্যবস্থা করা হয়, এই কাজটি একবারেই করা যাবে না।

ছবিসূত্র: বিবিসি বাংলা

Leave a Reply