সতর্ক সংকেত ও এর অর্থ


সমুদ্র ও সমুদ্রবন্দরের জন্য সংকেত: সমুদ্র ও সমুদ্রবন্দরের জন্য মোট দশটি সংকেত প্রচলিত।

দূরবর্তী সতর্কসংকেত ১দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত ২ শুধু গভীর সমুদ্র এলাকার জন্য।
 এর মধ্যে প্রথমটির অর্থ দূরে, গভীর সমুদ্রে ঘন্টায় ৬১ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া অঞ্চল রয়েছে, এই ঝড় সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হতে পারে।
 দ্বিতীয়টির অর্থ দূরে, গভীর সমুদ্রে ঝড় সৃষ্টি হয়েছে যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার।
• সতর্ক সংকেত ১ ও ২ এর ক্ষেত্রে বন্দর এখনই ঝড়ের কবলে পড়বে না, তবে বন্দর ত্যাগী জাহাজ এই ঝড়ের কবলে পড়তে পারে। মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলতে হবে, যাতে স্বল্প সময়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে আসতে পারে।
• দেশের নদীবন্দর, সমুদ্র ও সমুদ্রবন্দর এবং উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য ঝড়ের সংকেত শুরু হয় স্থানীয় সতর্ক সংকেত ৩ থেকে। এর অর্থ বন্দর ও এর সংলগ্ন এলাকায় একটানা ঘন্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে চলাচলকারী অনুর্ধ্ব ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যের নৌযান, মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতি সত্বর নিরাপদ আশ্রয় নিতে হবে।
হুঁশিয়ারি সংকেত ৪ এর অর্থ বন্দর ও সংলগ্ন এলাকা ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ৫১-৬১ কিলোমিটার। এ সময় থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের চুড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। অনুর্ধ্ব ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যর যেসব নৌযান এই বেগের ঝড়ো হাওয়া প্রতিরোধে সক্ষম নয় সেগুলোকে অনতিবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে। মেগাফোন এবং মাইক দ্বারা স্থানীয় জনগণকে জানাতে হবে এবং ১ টি সংকেত পতাকা উত্তোলন করতে হবে।
• বিপদ সংকেত ৫,৬ এবং ৭ এর অর্থ মাঝারি তীব্রতা সম্পন্ন সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন্দর ও সংলগ্ন এলাকায় মাঝারি ঝড়ো আবহাওয়া বিরাজ করবে।
৫ নম্বর বিপদ সংকেত ঘন্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ সম্পন্ন একটি ঘূর্ণিঝড় বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
বিপদ সংকেত ৬ এর ক্ষেত্রে একই শক্তিসম্পন্ন (৬২-৬৮ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ) ঘূর্ণিঝড় বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
বিপদ সংকেত ৭ এর ক্ষেত্রেও একই শক্তিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় (৬২-৬৮ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ) বন্দরের ওপর অথবা কাছ দিয়ে অতিক্রম করবে।
 উত্তর বঙ্গোপসাগরের সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে। ২ টি সংকেত পতাকা উত্তোলন করতে হবে।
মহাবিপদ সংকেত ৮ এর ক্ষেত্রে ঘন্টায় ৮৯-১১৭ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ সম্পন্ন একটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় সমুদ্র বন্দরের বাঁ দিক দিয়ে অতিক্রম করবে।
মহাবিপদ সংকেত ৯ এর ক্ষেত্রে ঘন্টায় ১১৮-১৭০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ সম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় বন্দরের ডান দিক দিয়ে অতিক্রম করবে।
মহাবিপদ সংকেত ১০ এর ক্ষেত্রে ঘন্টায় ১৭১ কিলোমিটারের বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় বন্দরের ওপর দিয়ে বা কাছ দিয়ে অতিক্রম করবে। সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।
সতর্ক সংকেত ৮-১০ হলে এলাকায় ৩টি সংকেত পতাকা উত্তোলন এবং সময়ে স্থানীয় জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নির্দেশনা দিতে হবে।
(উল্লেখ্য, ৫ থেকে ৭ পর্যন্ত বিপদ সংকেত এবং ৮ থেকে ৯ পর্যন্ত মহাবিপদ সংকেতগুলো শুধুমাত্র সমুদ্র বন্দর গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। এই সময়ে উপদ্রুত এলাকার অথবা তার নিকটবর্তী এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এবং কৃষিব্যবস্থা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোন বার্তা দেওয়া নেই।)

নদী বন্দরের সংকেত: দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নদীবন্দরগুলোর জন্য মোট ছয়টি সতর্ক সংকেত বর্তমানে প্রচলিত
• ছয়টি সংকেতের প্রথমটি স্থানীয় সতর্ক সংকেত ৩। দ্বিতীয়টি হুঁশিয়ারি সংকেত ৪।
• নদীবন্দরের জন্য শুধু ৩ এবং ৪ সম্বর সতর্ক সংকেত ব্যবহার করা হয় যা কালবৈশাখী ও বর্ষাকালীন ঝড়ো হাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
• বড় ঝড় কিংবা ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে সমুদ্রবন্দরের মতোই নদী বন্দরেও বিপদ সংকেত ৬ এবং মহাবিপদ সংকেত ৮, ৯ ও ১০ ব্যবহার করা হয়।

Leave a Reply