চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি তারিখ থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলায় টানা বৃষ্টির কারণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং একইসাথে গত ২৬ মে বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানার সারাদেশ এবং ইন্ডিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতে ফলে এবং ইন্ডিয়ার উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাটে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে গত ৩০/০৫/২০২৪ তারিখ বন্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলা। সিলেট জেলার প্রধান দুটি নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি উপচে পড়ার কারণে একের পর এক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত ২৯ থেকে এই সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং আজ ০২ তারিখে এই সব নদ-নদীর পানির স্থিতিশীল আছে এবং বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রমতে, ২০২৪ সালের মে মাসে সিলেটে ৭০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। ২০২৩ সালের মে মাসে সিলেটে ৩৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। তবে এর আগের বছর ২০২২ সালের মে মাসে ৮৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল এবং ওই বছর সিলেটে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল।
জলাবদ্ধতা
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী উজান থেকে ভাটির দিকে পানি নামতে শুরু করায় সিলেটে উপশহর, সুবহানিঘাট, যতরপুর, মেন্দিবাগ, কাজিরবাজার, মাছিমপুর, তালতলাসহ সিলেট নগর, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। তাছাড়া সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে সুরমার পানি সিটি করপোরেশনের নিচু এলাকায় ঢুকে পড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতি
সিটি করপোরেশনের নয়টি ওয়ার্ডসহ সদর উপজেলা, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জের ৫৯টি ইউনিয়নের ৬ লাখ ৯ হাজার ৭৩৩ জন বন্যা কবলিত হয়েছে। জেলার আটটি উপজেলায় ৭৮১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে যে সব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে
সরকারি ও বেসরকারিভাবে শুকনো ও রান্না করা খাবার, বিশুদ্ধ পানি বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। ৫৫০টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। বর্তমানে আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ হাজার ৩৪২ জন আশ্রয় নিয়েছেন।