পরিস্থিতি প্রতিবেদন ৫, ২২ মে ২০২২
বর্তমান পরিস্থিতি
বন্যা পূর্বাভাস এবং সতর্কীকরণ কেন্দ্রের মতে, সিলেটের ৪টি পয়েন্টে, সুনামগঞ্জের ২ টি পয়েন্টে এবং নেত্রকোনার ১টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।আগামী ২৪ ঘন্টায় সিলেটে এবং সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি সামান্য উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
জলাবদ্ধতা
সিলেট এলাকার বন্যার পানি যেমন চট করে আসে তেমনি দ্রুত নেমে যায়। এবছর বন্যার পানি নামতে সময় লাগছে এবং জলাবদ্ধতার রূপ নিচ্ছে। হাওর এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা নানা ভৌত অবকাঠামো এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা (যেমন-আবুরা সড়ক)। এসব অবকাঠামোর কারণে বন্যার পানি স্বাভাবিক নিয়মে ভৈরব হয়ে মেঘনা তথা বঙ্গোপসাগরে আগের গতিতে যেতে পারছে না।
ক্ষয়ক্ষতি
সিলেট জেলায় বন্যার কারণে আউশ ধানের বীজতলা এবং বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া সিলেটে প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এবং মাদরাসাসহ ৬৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যা কবলিত হয়েছে এবং শিক্ষা পাঠদান বন্ধ রয়েছে। সিলেট জেলায় বিদ্যুৎবোর্ডগুলো পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ রয়েছে। ফলে নিরাপদ পানির সরবরাহ ও সংগ্রহে সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়াও, পানিতে আটকে থাকা এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।
বন্যার সময় শিশু সুরক্ষা
বন্যাকবলিত অঞ্চলে স্কুলগুলোকে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে স্কুলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে শিশুদের শিক্ষা অনিশ্চিত করে তুলছে। এমনিতেই কোভিড অতিমারীর জন্য দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল। এছাড়া, শিশুরা দীর্ঘদিন ঘরে পানিবন্দী হয়ে থাকায় খেলাধুলা করতে পারছে না, যা তাদের মধ্যে মানসিক চাপ বাড়িয়ে তুলছে। বন্যার পানির কারণে শিশুদের মধ্যে চর্মরোগসহ অন্যান্য পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি শিশুদের শুধু শুকনো খাবার গ্রহণ করায় পুষ্টিগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। বন্যা আক্রান্ত এলাকাগুলোতে শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বন্যায় খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত শিশুদের সুরক্ষা বন্যার পানিতে কম বয়সী শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনা ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই সময়ে শিশুদের নিরাপত্তা বিশেষ করে যাদের আগে থেকে খিঁচুনি বা মৃগী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝোঁক আছে তাদের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। দীর্ঘ সময় জলাবদ্ধতা এই বিপদ আরো বাড়িয়ে দেয়। |