ঈদের আনন্দে যখন নামে বিষাদ

ঈদের ছুটিতে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় লিখেছেন গওহার নঈম ওয়ারা (প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৩)

ঈদের ছুটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২টি প্রাণ ঝরে গেল। নিহত ব্যক্তিদের অনেকে শিশু–কিশোর। পানিতে ডুবেও শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

সুকুমার রায় তাঁর ‘হরিষে বিষাদ’ পদ্যে বছরের বিভিন্ন সময়ের ছুটির সালতামামি দিতে গিয়ে লিখেছেন—‘ঈদ্ পড়েছে জষ্ঠি মাসে, গ্রীষ্মে যখন থাকেই ছুটি’। ছুটির মধ্যে ছুটির এমন অবস্থা দেখে খোকা কেঁদে–ককিয়ে একাকার। তার পাওনা ছুটিটা গ্রীষ্মের ছুটির পেটে বিলীন হয়ে যাওয়ায় এমন আক্ষেপ। সুকুমারের পদ্যে খোকার তো ছুটির পেটে অন্য ছুটি হারিয়ে যাচ্ছে। আর এখন তো ছুটির পেটে প্রাণ হারানোর আশঙ্কা আর উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা অনেক বেশি।

কয়েক বছর ধরে চাঁদরাত থেকে আহত আর নিহতের খবর আসছে সংবাদমাধ্যমে আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পরিবারের কোনো সদস্য এখন মোটরসাইকেল নিয়ে বের হলে স্বজনদের আর স্বস্তিতে থাকার কোনো উপায় থাকে না, বিশেষ করে ঈদের ছুটির কয়েক দিন ঝুঁকিটা যেন অনেক বেশি বেড়ে যায়।

সাতক্ষীরার তালায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন (চাঁদরাত) শুক্রবার সন্ধ্যায় পাটকেলঘাটা এলাকা থেকে দুই ভাই ইমরান ও রিফাত ঈদের কেনাকাটা করে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আরেকজন। তালার হাজরাপাড়ায় মাইক্রোবাসের সঙ্গে তাঁদের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেলের তিন আরোহী গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে ইমরান মারা যান। ঢাকায় নেওয়ার পথে রিফাতেরও মৃত্যু হয়।

ঈদের জামাতের স্থান ও সময়ের খবরের পাশাপাশি দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর টেলিভিশনের পর্দায় ভাসতে থাকে। ফেসবুকের পাতায় পাতায় সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষ সমবেদনা জানান, পড়তে থাকে অগুনতি বিষাদের নির্ধারিত চিহ্ন। অনলাইন সংবাদমাধ্যমে পরদিন খবর হয়—‘চাঁদরাতে দুর্ঘটনা, ঈদের দিন বাড়িতে গেল দুই ভাইয়ের মরদেহ’।

দুই সহোদরের দাফন হতে না হতেই যশোরের বাঘারপাড়া এলাকার আল–আমিনের মৃত্যুর খবর আসে গণমাধ্যমে। ঈদের নামাজ শেষে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। বেলা ১১টার দিকে বড় ভাই ইমনকে ছাতিয়ানতলা বাজারে রেখে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে চাড়াভিটা এলাকায় ইটভাটার সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে তাঁর মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় আল-আমিন সড়কে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কিশোর–তরুণদের অকালে ঝরে পড়ার মিছিল বড় হতে থাকে। দিনাজপুর, মাদারীপুর, বগুড়া, নেত্রকোনাসহ প্রায় সারা দেশ থেকে ঈদের আনন্দ মাটি করা, মায়ের বুক খালি করা খবর আসতে থাকে। ঈদের আগে–পরের ছুটিতে ২৩ জেলায় গত শুক্রবার বিকেল থেকে গত সোমবার পর্যন্ত গণমাধ্যমে কমপক্ষে ৫২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ৬২ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এক মোটরসাইকেলে তিনজন, কোথাও চার আরোহী ছিলেন। অনেকের মাথায় ছিল না হেলমেট।

শিশু চালক
টানা কয়েক দিনের ছুটি থাকলে শহুরে মানুষ গ্রামের বাড়ি ছুটে যায়। মা–বাবা, ভাই–বোন, দাদা–দাদি, নানা–নানির সঙ্গে ছুটি কাটানোর মজাই আলাদা। এখন মজার অন্যতম উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে হুরুম–দুরুম মোটরসাইকেল চালানো। বলা বাহুল্য, এসব চালকের অনেকেরই লাইসেন্সের আবেদন করার বয়স হয়নি। এবার ঈদের ছুটিতে নিহত অনেকেরই লাইসেন্স ছিল না।

যেমন মাত্র দশম শ্রেণিতে পড়ে বিপ্লব হোসেন। জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের বিপ্লব মোটরসাইকেল নিয়ে ‘ঈদের আনন্দ’ করতে বের হয়েছিল। অতিরিক্ত গতির কারণে সে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সজোরে ধাক্কা লাগে। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই পথে মৃত্যু হয়।

অতিরিক্ত আরোহী
মোটরসাইকেলে অতিরিক্ত আরোহী না নিলে আনন্দ কম। কাউকে বাদ দিতে মন চায় না। ২১ বছরের মাসুদ রানা (সেতু) চেয়েছিল ঈদের ছুটিতে ছোট বোন জিন্নাত রহমান বীথিকে (১৩) নবাবগঞ্জ কাঠের সেতু দেখাবে। বিরামপুর থেকে মোটরসাইকেলে নবাবগঞ্জ যাওয়ার পথে তাদের সঙ্গে সওয়ার হয় আরও দুজন। চার আরোহী নিয়ে মোটরসাইকেল গোলাপগঞ্জ গরিবপাড়া জামে মসজিদ পার হওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা অটোরিকশার সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবাই ছিটকে পড়ে। চারজনই গুরুতর আহত হন। মাসুদ রানাকে বিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

‘ওভারটেক’ আর প্রতিযোগিতার ফাঁদে
কম বয়সী চালকদের মধ্যে ঈদের জোশে একে অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা কাজ করে। এই মানসিকতা থেকেও অনেক দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। সাভারের আশুলিয়ার হাবিবুল ইসলাম (২১) ঈদে বন্ধুদের সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। রাস্তায় একটি মোটরসাইকেল তাদের পাশ দিয়ে চলে গেলে তাঁর জেদ জাগে তাঁকে ‘ওভারটেক’ করার। সেটাই কাল হয়। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে দুই পা ভেঙে পঙ্গু হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন তিনি।

আহত বেশি
দুর্ঘটনায় চালক বা সহযাত্রী নিহত না হলে খুব একটা খবর হয় না। আহতদের অনেকেই স্থায়ী পঙ্গুত্বের শিকার হন। অনেকে ঠিকমতো চিকিৎসার খরচও চালাতে পারেন না। এতে সৃষ্টি হয় নানা মানসিক আর সামাজিক জটিলতা।

রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) সূত্রে জানা যায়, শুধু ঈদের দিনেই বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় আহত ২১৬ জন এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন বা নিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ৯৬ জনকে দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। ঈদের পরদিন গত রোববার (২৩ এপ্রিল) বেলা দুইটা পর্যন্ত হাত-পা ভাঙা ১০৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জনের অবস্থা গুরুতর।

পঙ্গু হাসপাতালে হঠাৎ বেড়েছে রোগী
গত শনিবার ঈদের দিন নিটোর অর্থাৎ পঙ্গু হাসপাতালে অনেক রোগী ছিল। ঈদের পরদিনও রোগীর চাপ ছিল। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগী এসেছে। নানা হাসপাতাল ঘুরে এখানে অনেকে আসেন শেষ চেষ্টা করতে। পঙ্গু হাসপাতালের আশপাশের কথিত অর্থোপেডিকস ক্লিনিক বা হাসপাতালে রোগীর মৌসুম এখন। রাজধানীর বাইরে থেকে এসে অনেকেই দালালের খপ্পরে পড়ে এসব ক্লিনিকে চালান হয়ে যান।

পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু
সড়ক দুর্ঘটনা ছাড়াও গণমাধ্যমে এসেছে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর ঘটনা। বাগেরহাটের ফকিরহাটে ঈদের ছুটিতে মামার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে পুকুরে ডুবে মারা গেছে স্কুলছাত্রী প্রীতি সাহা। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী প্রীতি গত শুক্রবার (২১ এপ্রিল) বেলা একটার দিকে আরও দুই শিশুসহ কাঁঠালিডাঙ্গা গ্রামে পুকুরে গোসল করতে যায়। এ সময় সে পানিতে ডুবে যায়। এ সময় অন্যদের চিৎকারে স্বজনেরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। চিকিৎসক বলেন, শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।

ঢাকা থেকে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ বেড়াতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে ছয় বছরের সাইফুল্লাহ। একই সঙ্গে মারা গেছে প্রতিবেশী আবদুল্লাহ (৫)। ঈদের ছুটিতে সাইফুল্লাহ নানাবাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল। আবদুল্লাহ ও সাইফুল্লাহ পাশের মসজিদের পুকুরে গোসলে নেমে পানিতে ডুবে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক মো. সাইফুল বলেন, সম্ভবত একজন পড়ে গেলে অন্যজন তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে দুজনই পানিতে ডুবে মারা গেছে।

ঈদের নামাজে যেতে বন্ধুদের সঙ্গে ধানসিঁড়ি নদীতে গোসলে নামেন শাওন। কিছুক্ষণ পর তাঁকে না দেখে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন সঙ্গীরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অভিযান চালিয়ে এক ঘণ্টা পর তাঁর মরদেহ উদ্ধার করেন। শাওনের বাবা আলতাফ হাওলাদার বলেন, ‘আমার ছেলে মৃগীরোগী। সকালে পানিতে নামার পর মৃগীরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হতে পারে।’ এভাবে ঘটনা বললে তালিকা অনেক দীর্ঘ হবে।

এবার ঈদের ছুটির সঙ্গে এসএসসির ছুটি যোগ হওয়ায় লম্বা ছুটিতে থাকবে অনেক শিক্ষার্থী। অনেকে আরও কয়েক দিন নানা–দাদার সান্নিধ্যে থাকবে। এই সময় শিশু–কিশোরদের প্রতি আমাদের বিশেষ নজর রাখতে হবে। গ্রামে পুকুর–নদীতে গোসল করতে গিয়ে যে শুধু শিশুরা ঝুঁকিতে থাকবে, তা নয়। শহরে বাসাবাড়িতেও বালতি ও বাথটাবের পানিতে পড়ে শিশুরা মারা যাচ্ছে।

বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ পানিডুবি। গবেষণা বলছে, সাধারণত ১২ থেকে ১৫ মাস বয়সে শিশুরা হাঁটতে শেখে। নতুন এই অভিজ্ঞতার পুরোটাই তারা উপভোগ করতে চায়। ফলে এই শিশুদের পরিবারের সদস্যরা ব্যস্ত থাকলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি থাকে।

পানিতে ডুবলে শিশুকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে এবং নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।

দীর্ঘদিনের কিছু কুসংস্কার যেমন শিশুকে পানি থেকে তুলে মাথায় নিয়ে ঘোরানো, ছাই বা লবণ দিয়ে শিশুর শরীর ঢেকে দেওয়া বা বমি করানোর চেষ্টা—এসব করে সময় নষ্ট করা যাবে না।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয়

সব সময় খেয়াল রাখতে হবে, শিশু যেন একা জলাধারের কাছে না যায়। বাড়ির পুকুরের চারপাশে বেড়া দেওয়া যেতে পারে। বাড়িতে পানিভর্তি পাত্র বা বালতি সব সময় ঢেকে রাখতে হবে। শিশুর বয়স ৫ বছর হলে তাকে সাঁতার শেখানো উচিত। শিশুকে একা পানিতে নামতে দেওয়া যাবে না।

শিশুর মৃগীরোগ থাকলে, সেটা গোপন রাখাটা তার প্রতি আবিচারের শামিল। এমন শিশুদের আগুন, পানি থেকে দূরে রাখা জরুরি। শাওনকে জলাধারের কাছে না পাঠালে হয়তো তাঁর আচানক মৃত্যু হতো না।

সাঁতার জানলে পানিতে ডুবে শিশুর ঝুঁকি কমে। আবার সাঁতার জানা শিশুর সঙ্গে সাঁতার না–জানা শিশুকে ছেড়ে দিয়ে আমরা দুজনেরই ঝুঁকি বাড়িয়ে দিই। মেহেন্দীগঞ্জে আবদুল্লাহ ও সাইফুল্লাহ একে অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনেই মারা গেছে। সাঁতার জানা আর ডুবন্ত মানুষকে উদ্ধার করা ভিন্ন বিষয়—সাঁতার শেখানোর সময় এসব বিষয় শিশুদের ভালোভাবে বোঝাতে হবে।

ঈদের মতো ছুটির দিনগুলোতে মোটরসাইকেল চলাচলে তদারকি বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের মুখ্য ভূমিকা রাখতে হবে। নাবালক বা লাইসেন্স না থাকা সন্তান বা স্বজনের হাতে মোটরসাইকেল তুলে দিয়ে তারাই সবার বিপদ ডেকে আনে। আহ্লাদের সীমা না টানলে আমরা সুকুমারের পদ্যের মজা নিতে পারব না—

দেখছে খোকা পঞ্জিকাতে এই বছরে কখন কবে

ছুটির কত খবর লেখে, কিসের ছুটি ক’দিন হবে।

ঈদ্ মহরম দোল্ দেওয়ালি বড়দিন আর বর্ষাশেষে—

ভাবছে যত, ফুল্লমুখে ফুর্তিভরে ফেলছে হেসে।

এমনকালে নীল আকাশে হঠাৎ-খ্যাপা মেঘের মত,

উথলে ছোটে কান্নাধারা ডুবিয়ে তাহার হর্ষ যত।

“কি হল তোর?” সবাই বলে, “কলমটা কি বিঁধল হাতে?

জিবে কি তোর দাঁত বসালি? কামড়াল কি ছারপোকাতে?”

প্রশ্ন শুনে কান্না চড়ে অশ্রু ঝরে দ্বিগুণ বেগে,

পঞ্জিকাটি আছড়ে ফেলে বললে কেঁদে আগুন রেগে;

“ঈদ্ পড়েছে জষ্ঠি মাসে গ্রীষ্মে যখন থাকেই ছুটি,

বর্ষাশেষ আর দোল্ ত দেখি রোব্‌বারেতেই পড়ল দুটি।

দিনগুলোকে করলে মাটি মিথ্যে পাঁজি পঞ্জিকাতে—

মুখ ধোব না ভাত খাব না ঘুম যাব না আজকে রাতে।”

Leave a Reply