ডায়রিয়া বা কলেরা থেকে রক্ষায় করণীয়

চিকিৎসকদের মতে নিম্নলিখিত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। 

  • পানি ফুটিয়ে পান করা। 
  • রাস্তার পাশের খোলা খাবার বা শরবত জাতীয় পানি গ্রহণ না করা। 
  • বাইরে গেলে সঙ্গে সহজ বহনযোগ্য পাত্রে নিরাপদ পানি রাখা।
  • পানির বোতল বা পানি রাখার পাত্র জীবাণুমুক্ত রাখা। 
  • শিশুরা যাতে হাত ধোয়া, কুলি করা বা মুখ ধোয়া ইত্যাদি কাজের জন্য ফুটানো পানি ব্যবহার করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • যেকোনো খাবার গ্রহণের আগে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করা।
  • ভালো করে গরম না করে বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। 
  • জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেকেই একসাথে কয়েকদিনের খাবার রান্না করে রাখছেন, এটি পরিহার করতে হবে। 

ডায়রিয়া বা কলেরা হলে করণীয়

  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে, বারবার খাবার স্যালাইন খেতে হবে। সঙ্গে অন্যান্য তরল যেমন পানি, ডাবের পানি, চিড়ার পানি ইত্যাদিও খেতে পারেন। পানিশূন্যতা যেন না হয়ে যায়, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। 
  • শিশু ও প্রবীণদের পানিশূন্যতার ঝুঁকি বেশি থাকে তাই তাদের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে। 
  • শিশুদের ক্ষেত্রে মারাত্মক পানিশূন্যতার লক্ষণ হচ্ছে প্রস্রাব না হওয়া, কাঁদলে চোখে পানি না আসা, নেতিয়ে যাওয়া, চোখ গর্তে ঢুকে যাওয়া।  
  • এই পরিস্থিতিতে খাবার বন্ধ করা যাবে না। সব ধরনের পুষ্টিগুণসম্পন্ন এবং পরিচ্ছন্ন খাবার গ্রহণ করতে হবে। 
  • শিশুদের জন্য মায়ের বুকের দুধ দেওয়া বন্ধ করা যাবে না।
  • পানিশূন্যতা দেখা দিলে, ডায়রিয়ার সঙ্গে বারবার বমি, জ্বর, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে যাওয়া ও পায়খানার সঙ্গে রক্ত গেলে রোগীকে চিকিৎসক অথবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না। 

চালের গুড়ার স্যালাইন ডায়রিয়া থেকে অনেক শিশুর প্রাণ রক্ষা করবে

যে অঞ্চলের পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেশি সেখানে বাজারের প্যাকেটজাত স্যালাইনের কার্যকারিতা আশানুরূপ হয় না। এইসব এলাকায় ঘরে তৈরি চালের গুঁড়ার স্যালাইন বেশি কার্যকরী হতে পারে। 

কি ভাবে চালের গুঁড়ার স্যালাইন বানাবেন 

চালের গুঁড়ার স্যালাইন বানাতে প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে আধা সেরেরও কিছু বেশী নিরাপদ পানি নিতে হবে। এবার এতে পাঁচ চা চামচ চালের গুঁড়ো মিশাতে হবে। এরপর মিশ্রণটি ৩ থেকে ৫ মিনিট চুলায় জ্বাল দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। সেদ্ধ করার সময় একটি পরিষ্কার চামচ দিয়ে বার বার নাড়াতে হবে। না নাড়ালে চালের গুঁড়া জমে যাবে। মিশ্রণটি চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে দিতে হবে। (পানি লবণাক্ত হলে লবণ মেশানোর দরকার হবে না) খাওয়ানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলো চালের গুঁড়ার স্যালাইন। তৈরীর পর কোন স্যালাইন ৬ থেকে ৭ ঘন্টার বেশী রাখা উচিত নয়; প্রয়োজনে, আবার নতুন করে খাবার স্যালাইন তৈরী করে নিতে হবে।