ভাদ্র মাসের পূর্ণিমার জোয়ারে উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ভাদ্র-আশ্বিন মাসে সাধারণত জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি থাকে। বিশেষ করে ভাদ্র মাসের ভরা ও মরা কাটালে সাগরে জোয়ারের চাপ বৃদ্ধি পায়। এসময় পূর্ণিমা ঘিরে সাগরে পানির স্ফীতি বেশি থাকে ফলে জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ভাদ্রপদ পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে। এদিন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হবে, যা ইউরোপ, আফ্রিকার কিছু অংশ, এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় দেখা যাবে। এ ধরনের সময়ে উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ারের পানি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

টাইডাল ফোরকাস্ট অনুযায়ী—(https://www.tide-forecast.com/tide/Chittagong-Bangladesh/tide-times)

এলাকাসেপ্টেম্বর ৭ (ফুট/সময়)সেপ্টেম্বর ৮ (ফুট/সময়)সেপ্টেম্বর ৯ (ফুট/সময়)
চট্টগ্রাম১৩.৫২ ফুট (রাত ০০.২৫)১৪.৮৩ ফুট (দুপুর ১২.৪১)১৪.৪৭ ফুট (রাত ১.০২)১৫.২৬ ফুট (দুপুর ১.১৭)১৫.১৩ ফুট (রাত ১.৩৯)১৫.৩৬ ফুট (দুপুর ১.৫৪)
কক্সবাজার১১.৯১ ফুট (সকাল ৯.৪০)১১.৪৮ (রাত ১০.০০)১২.৩৭ ফুট (সকাল ১০.১২)১২.১৪ ফুট (রাত ১০.৩৪)১২.০৫ ফুট (সকাল ১০.৪৫)১২.৪৩ ফুট (রাত ১১.০৮)
বরগুনা১০.৩ ফুট (সকাল ১০.১৪)৯.৭৮ ফুট (রাত ১০.৩৪)১০.৬ ফুট (সকাল ১০.৪৬)১০.২৪ ফুট (রাত ১১.০৯)১০.৫৭ ফুট (সকাল ১১.২০)১০.৪৩ ফুট (রাত ১১.৪৫)
খুলনা১০.৬৬ ফুট (সকাল ৯.৪৫)১০.৪৩ ফুট (রাত ১০.০১)১১.০৯ ফুট (সকাল ১০.১৮)১০.৯৩ ফুট (রাত ১০.৩৭)১০.৩২ ফুট (সকাল ১০.৫২)১১.২২ ফুট (রাত ১১.১২)

পূর্ববর্তী বছরের অভিজ্ঞতা

উপকূলীয় মানুষের জন্য সতর্কতা ও করণীয়
চলতি বছরের টানা বৃষ্টিপাত, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি এবং জোয়ারের কারণে ইতোমধ্যেই উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকার বাঁধ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে খুলনা জেলার কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপ উপজেলার বেড়িবাঁধ (২৮ মে, ২০২৫), চট্টগ্রাম জেলার শঙ্খ নদী ও সাগরের বেড়িবাঁধ, হালদা নদীর পুরানো বেড়িবাঁধ (৩০ মে, ১৪ জুন ২০২৫) এবং লক্ষ্মীপুরের মেঘনা উপকূলবর্তী সদর ও কমলনগর উপজেলা (০৩ মে, ২০২৫)। আসন্ন পূর্ণিমার জোয়ারের সময় এসব বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করার আশঙ্কা রয়েছে, যা উপকূলীয় জনগণের ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনকে জরুরি ভিত্তিতে নাজুক বাঁধসমূহ মেরামতের উদ্যোগ নিতে হবে এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সতর্কবার্তা নিয়মিত প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে প্রয়োজনের মানুষকে বিশেষকরে নারী ও শিশু এবং বয়স্কদের দ্রুত নিরাপদস্থানে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখা প্রয়োজন এবং বিশেষ করে গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। জোয়ারের পানি নেমে গেলে আশপাশের পরিবেশ দ্রুত পরিষ্কার রাখা এবং পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করাও অত্যন্ত জরুরি।
 

ছবি: https://publicnewsbd.com/details/?pid=6319

Leave a Reply